কোলেস্টেরল কি?
কোলেস্টেরল: কোলেস্টেরল এক বিশেষ ধরনের জটিল স্নেহ পদার্থ বা লিপিড এবং স্টেরয়েড-এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। মানুষের প্রায় প্রত্যেক কোষ ও টিস্যুতে কোলেস্টেরল থাকে। যকৃৎ এবং মগজে এর পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। কোলেস্টেরল অন্যান্য স্নেহ পদার্থের সাথে মিশে রক্তে স্নেহের বাহক হিসেবে কাজ করে। স্নেহ এবং প্রোটিনের যৌগকে লাইপোপ্রোটিন বলে। স্নেহের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে লাইপোপ্রোটিন দুই রকম— উচ্চ ঘনত্ব বিশিষ্ট লাইপোপ্রোটিন (High Density Lipoprotein-HDL) এবং নিম্ন ঘনত্ববিশিষ্ট লাইপোপ্রোটিন (Low Density Lipoprotein LDL)। রক্তের LDL-এর পরিমাণের বৃদ্ধির সাথে কোলেস্টেরলের আধিক্যের সম্পর্ক আছে। রক্তে LDL-এর পরিমাণ বেশি থাকা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। রক্তে HDL-এর পরিমাণ বেশি থাকা শরীরের জন্য উপকারী। রক্তে কোলেস্টেরলের স্বাভাবিক পরিমাণ ১০০-২০০ mg/dL। রক্তে কোলেস্টেরলের আধিক্য হৃদ্রোগের আশঙ্কা বাড়ায়। স্বাভাবিক মাত্রা থেকে রক্তে কোলেস্টেরল বেশি হলে রক্তনালি অন্তঃপ্রাচীরের গায়ে কোলেস্টেরল ও ক্যালসিয়াম জমা হয়ে রক্তনালি গহ্বর ছোট হয়ে যায়। এ কারণে ধমনির প্রাচীরের স্থিতিস্থাপকতা কমে যায় এবং শক্ত হয়ে যায়। এ অবস্থাকে ধমনির কাঠিন্য বা arteriosclerosis বলে। আর্টারিওস্কেলরোসিসের কারণে ধমনির প্রাচীরে ফাটল দেখা দিতে পারে। ধমনির গায়ে ফাটল দিয়ে রক্তক্ষরণ হয়ে জমাট বেঁধে রক্তপ্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়। হৃৎপিণ্ডের করোনারি রক্তনালিকায় রক্ত জমাট বাঁধলে তাকে করোনারি থ্রম্বোসিস বলে এবং মস্তিষ্কের রক্তনালিতে রক্ত জমাট বাঁধলে তাকে সেরিব্রাল থ্রম্বোসিস বলে। এতে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু ঘটতে পারে। রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে LDL-এর পরিমাণ বেড়ে যায় আর HDL-এর পরিমাণ কমে যায়। LDL-এর পরিমাণ ১৫০ mg/dL থেকে বেশি হলে তাকে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন